বরগুনা পুলিশ সুপারকে জমি দখল করবে না বলে লিখিত মুচলেকা দেওয়ার পরও আমতলীতে এক কৃষকের জমির ধান কেটে নিয়ে গেছে বলে জানা গেছে। শুধু তাই নয়, ঘটনার বিষয়ে পুলিশকে জানালে কৃষককে প্রাণ নাশের হুমকিও দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুরে ভুক্তভোগী কৃষক আব্দুল মন্নান আকন আমতলী সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে এসে এসব অভিযোগ করেন । ভয়ের কারণে গত দুই দিন ধরে তিনি ঘর থেকে বের হতে পারেননি বলেও অভিযোগ করেন ওই কৃষক।
গত সোমবার দুপুরে আমতলী উপজেলার আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম সোনাখালী গ্রামে ধান লুটের ঘটনাটি ঘটেছে। কৃষক আব্দুল মন্নান আকনের অভিযোগ- তার ছেলে আব্দুল গাফফার চলতি বছরের ৩ জুলাই মোস্তফা আনোয়ার চৌধুরীর কাছ থেকে ২৬ শতাংশ জমি ক্রয় করেন। ওই জমিতে আমন ধান রোপণ করেন। সেসময় তাদের কাছে রাসেল প্যাদা, মাহতাব প্যাদা, আলতাফ খাঁন, সামসুল হক মৃধা ও মনির আকন সহ কয়েকজন তার ছেলের কাছ থেকে তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানানোয় তারা ক্ষিপ্ত হয়ে জোরপূর্বক জমি দখল করে নেয় বলেওি অভিযোগ করেন তিনি।
কৃষক আব্দুল মন্নান আকন বলেন, এ ঘটনায় তিনি গত ২ অক্টোবর বরগুনা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় পুলিশ সুপার অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। পরে অভিযুক্ত ভুমি দস্যুরা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে গিয়ে জমি দখল করবে না বলে মুচলেকা দিয়ে রক্ষা পায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি জানান, রাসেল প্যাদা ও মাহতাব প্যাদাসহ তাদের সহযোগীরা প্রকাশ্যেই হারভেস্টার মেশিন ব্যবহার করে ধান কেটে নিয়ে গেছে।
ভুক্তভোগী কৃষক আব্দুল মন্নান আকন বলেন, পুলিশ সুপারকে মুচলেকা দিয়েও তারা আমার জমির ধান কেটে নিয়ে গেছে। ধান কেটে নিয়েও ক্ষান্ত হয়নি, পুলিশকে জানালে আমাকে মেরে ফেলা হবে বলে হুমকি দিয়েছে। ভয়ে দুই দিন ঘর থেকে বের হতে পারিনি। আমি এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মাহতাব প্যাদা ধান কাটার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ওই জমি আমার ভাই রাসেল চাষ করেছে। স্থানীয়ভাবে মীমাংসায় চাষাবাদের খরচ বাবদ টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। টাকা না দেওয়ায় জমির একাংশের ধান কেটে আনা হয়েছে। আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জাহাঙ্গির হোসেন বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
