বরিশাল প্রতিনিধি : ঘুটঘুটে অন্ধকার, নিস্তব্ধ নদীপাড়… হঠাৎই ভেসে আসে ইঞ্জিনের গর্জন। মুহূর্তের মধ্যেই আলো জ্বলে ওঠে—চারদিক ঘিরে ফেলে প্রশাসন ও নৌ-পুলিশ। গিলাতলীতে চলছিল বালু লুটের রাতের খেলা, আর ঠিক সেই সময়ই নেমে আসে প্রশাসনের ঝটিকা অভিযান। শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে বরিশাল সদর উপজেলার গিলাতলী এলাকায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) আজহারুল ইসলাম-এর নেতৃত্বে চালানো অভিযানে ৪টি ড্রেজার ও বাল্কহেড জব্দ এবং ৪ জনকে হাতেনাতে আটক করা হয়।
পালানোর সব পথ বন্ধ করে দেওয়া হয় মুহূর্তের মধ্যেই। অভিযান চলাকালে অবৈধভাবে বালু ও মাটি উত্তোলনের অকাট্য প্রমাণ মেলে। ড্রেজার ও বাল্কহেডের মালিকদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিকভাবে ভ্রাম্যমাণ আদালতে ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এসআই সারোয়ারের নেতৃত্বে নৌ-পুলিশের একটি দল অভিযানে অংশ নেয়। টানটান উত্তেজনার মধ্যে কোনো সংঘর্ষ ছাড়াই পুরো এলাকা নিয়ন্ত্রণে নেয় প্রশাসন। পরে জব্দকৃত ড্রেজার ও বাল্কহেড স্থানীয় ইউপি সদস্য মামুন হুজুরের জিম্মায় রাখা হয়।
প্রশাসন সূত্র জানায়, বৈধ কাগজপত্র দেখাতে না পারলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মুচলেকা ছাড়া এই যানবাহন ছাড়ার সুযোগ নেই। অভিযান শেষে সহকারী কমিশনার (ভূমি) আজহারুল ইসলাম স্পষ্ট বার্তা দেন— “অন্ধকারের সুযোগ নিয়ে যারা নদী লুট করছে, তাদের জন্য আর কোনো নিরাপদ রাত থাকবে না।” দীর্ঘদিন ধরে গিলাতলীতে চলা অবৈধ বালু উত্তোলনের এই গোপন সাম্রাজ্যে প্রশাসনের এই অভিযানে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। স্থানীয়দের প্রশ্ন—এর পরের টার্গেট কারা?
দীর্ঘদিন ধরে গিলাতলী এলাকায় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় অবৈধ বালু উত্তোলন চলছিল। প্রশাসনের এই অভিযানে এলাকায় স্বস্তি ফিরলেও স্থায়ী সমাধানে নিয়মিত নজরদারির দাবি উঠেছে।
