কলাপাড়ায় এ বছর তরমুজের ভালো ফলন হয়েছে। ইতিমধ্যে ফসল কাটা শুরু হয়েছে। কেউ কেউ মার্কেটিং করছেন। দামও ভালো পাওয়ায় তরমুজ চাষিরা স্বস্তিতে। এ বছর অন্তত তিন হাজার কৃষক তরমুজ চাষ করেছেন। গত বছরের চেয়ে প্রায় ৩০০ একর বেশি তরমুজ আবাদ হয়েছে। কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর কলাপাড়ায় অন্তত চার হাজার আটশত ষোল একর জমিতে আবাদ হয়েছে।
বিক্রিতে ফলন ১৫০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মাত্র চার মাসেই ফলন পাওয়া যায়। এ বছর ভালো ফলন পেয়ে স্বস্তি পেয়েছেন কৃষকরা। সবচেয়ে বেশি তরমুজের আবাদ হয়েছে কলাপাড়ার ধানখালী, টিয়াখালী, নীলগঞ্জ, চম্পাপুর, লতাচাপলীতে। এসব ইউনিয়নের আশেপাশে গেলে দেখা যাবে ধূসর বিবর্ণ মাঠে সবুজের সমারোহ।
টিয়াখালীর উদ্যমী যুবক রাইসুল ইসলাম ফেরদৌস এ বছর ৭২ বিঘা জমিতে তরমুজ চাষ করেছেন। এখন পর্যন্ত গড় ফলন হয়েছে ৬-৭ কেজি। তিনি এ পর্যন্ত প্রায় ২৬ লাখ টাকা খরচ করেছেন। জেব্রা কিং এবং সুইট ড্রাগন
উদ্যমী এই যুবক জাতের তরমুজ ফলিয়েছেন। প্রায় এক লাখ টাকার বীজ কিনতে হয়েছে তাকে। গড়ে প্রায় ২০-২৫ জন শ্রমিক প্রায় চার মাস ধরে মাঠে কাজ করে। বাজারজাতকরণে প্রায় ৩০ লাখ টাকা খরচ হবে বলে জানান তিনি।
তবে শেষ মুহূর্তে কোনো সমস্যা বা কোনো দুর্যোগ না হলে অন্তত ৫০ লাখ টাকা মূল্যের তরমুজ বিক্রি করতে পারবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। মাত্র চার মাসে এই ফলন পাচ্ছেন ফেরদৌস। তিনি জানান, জমির ভাড়া বাবদ অতিরিক্ত ছয় লাখ টাকা খরচ হয়েছে। যে জমিতে ফেরদৌস দুই বছর ধরে তরমুজ লাগাতে গিয়েছিলেন। এই জমি আগে কর্তন করা হয়েছে। এটি এখন ব্যবহার করা হচ্ছে। এভাবেই এ বছর তরমুজ চাষ করে লাভের স্বপ্ন দেখছেন বিভিন্ন ইউনিয়নে কৃষকরা।
সবজি মজুদের জন্য বিখ্যাত কুমিরমারা গ্রামের কৃষক সুলতান গাজী জানান, তরমুজ চাষের জন্য পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানির প্রয়োজন। উপজেলার স্লুইসের সাথে সংযুক্ত খালে সুপেয় পানি সংরক্ষণের ব্যবস্থা থাকলে শুধু তরমুজ নয়, সবজি ও বোরো ধান চাষেও বিপ্লব ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। সেক্ষেত্রে মাছ ধরার নামে কোনো খাল ইজারা না দেওয়ার পরামর্শ দেন কৃষক। তিনি জানান, পাখিমারা খালের দুই পাড়ের ১১টি গ্রামের মানুষ ১২ মাস সবজি ও ধান চাষ করে।