বরিশাল নগরীর ২৯ নং ওয়ার্ডস্থ কাশিপুরে অবৈধভাবে ভেকু দিয়ে মাটি কাটায় একটি দুই তলা ভবন ধসে পড়ার উপক্রম হয়েছে। শুক্রবার (৭ জুন) নগরীর কাশিপুরের শিব বাড়ির মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। অবসরপ্রাপ্ত নৌ বাহিনী কর্মকর্তা মোঃ জাফর ইকবালের খামখেয়ালিপনার কারণে মোঃ ছত্তারের দুই তলা ভবনটি ধসে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। যেকোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশংকাও রয়েছে।
আইন লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে মাটি কাটার কারণে ওই ভবনের সামনের মাটি ধসে পড়েছে। ফলে ভবনের বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে পরেছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়- অবসরপ্রাপ্ত নৌ বাহিনী কর্মকর্তা মোঃ জাফর ইকবালের নিয়োগ করা ঠিকাদার মোঃ জাকির মাঝি মোঃ ছত্তারের দুই তলা ভবনের পাশেই ভেকু দিয়ে মাটি কাটার কাজ করেছেন।
বিষয়টি জানতে পেরে ছত্তার ও তার পরিবারের তাদের মাটি কাটতে নিষেধ করেন। কিন্তু তারা বিষয়টি কর্নপাত না করে মাটি কাটতে থাকেন। একপর্যায়ে ভবনের সামনের মাটি ধসে পড়েছে। নির্মিত ভবন রক্ষা করতে উপায়ন্ত না পেয়ে একপর্যায়ে মাটি কাটা বন্ধ করতে অনুরোধ করলেও তারা মাটি কাটা চালিয়ে যায়। পরে সংবাদকর্মীরা ঘটনাস্থলে গেলে মোঃ ছত্তারের বাসার সামনে বালু ফেলে পাঁকা করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সটকে পরেন ঠিকাদার মোঃ জাকির মাঝি।
বিষয়টি জানতে মুঠোফোনে কল দিলে অবসরপ্রাপ্ত নৌ বাহিনী কর্মকর্তা মোঃ জাফর ইকবাল বলেন, আমার কাজের অনুমতি আছে। গতকাল কমিশনারসহ আরো আনেকে এসে কাজ পরিদর্শন করে গেছে। আমি ভেকু দিয়ে কাজ করাইনি। ঠিকাদার করাইছে। এছাড়াও সব জায়গায় ভেকু দিয়ে মাটি কাটা হয়। হুমায়ন কবির কমিশনার সব জানে, আপনারা তার সাথে কথা বলেন। এটাতো ২৯ নং ওয়ার্ড এখানকার কাউন্সিলরতো হুমায়ন কবির না এমন প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে তিনি কলটি কেটে দেন।
ঠিকাদার মোঃ জাকির মাঝি বলেন- আমরা ভেকু দিয়ে মাটি কেটেছি, এতে কারো কোন ক্ষতি হয়নি। মোঃ ছত্তারের বাসার সামনে সামন্য ধসে গেছে সেটা আবার ঠিক করে দিয়েছি। ভেকু দিয়ে মাটি কাটা অবৈধ কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে মোঃ জাকির মাঝি বলেন- আগে জানতাম না, জানার পরেই মাটি কাটা বন্ধ করে দিয়েছি। আর ভেকু দিয়ে মাটি কাটবো না।
বহুতল ভবনের কাজ হাতে নিয়েছেন আপনার ঠিকাদার লাইসেন্স আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন- এ সব কাজের জন্য লাইসেন্স দরকার হয়না। আমারা কাজ করি বিনিময়ে পারিশ্রমিক নেই। আমার জামাইও কিন্তু একজন সাংবাদিক। সে জাতীয় পত্রিকায় কাজ করে। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ভবন মালিকের মেয়ে বলেন, আমাদের ভবনের সামনে ভেকু বসিয়ে মাটি কাটায় ভবনের সামনে রাস্তা ধসে পড়েছে।
ভবনটি এখন পুরোপুরি ভাঙ্গনের ঝুঁকিতে রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) বরিশাল বিভাগীয় সমন্বয়কারী রফিকুল আলম। তিনি বলেন, বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০-এর ৪-এর খ ও গ ধারা অনুযায়ী সেতু, কালভার্ট, বাঁধ, সড়ক, রেললাইন ও বসতবাড়ি সহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার এক কিলোমিটার এলাকার মধ্যে বালু বা মাটি তোলা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
কিন্তু যারা মাটি বা বালু তোলে তারা এই আইন মানে না। আইন অমান্য করার জন্য তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে কম ক্ষেত্রেই ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়। এ বিষয়ে ২৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইমরান হোসেন মোল্লা বলেন- বিষয়টি আমার জানা ছিল না। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’’