নিজস্ব প্রতিবেদক : বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার দুর্গাপাশা ইউনিয়ন বিএনপির সম্মেলনে আহ্বায়ক–সচিবের বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে কমিটিতে শীর্ষ স্থান লাভ ও ওয়ার্ড কমিটি থেকে ত্যাগী কর্মীদের বাদ দিয়ে আওয়ামী পন্থীদের দলে অন্তর্ভুক্ত করার অভিযোগ উঠেছে।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে- উপজেলা কমিটির সিলেকশনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক চূড়ান্ত করা হয়েছে। ফলে ভোট না হওয়ার আশঙ্কা করছে নেতাকর্মীরা। এ ইউনিয়ন বিএনপির সম্মেলনকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র বিতর্ক ও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। এদিকে বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) বিভিন্ন ওয়ার্ডে আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের নামে জুতা ও ঝাড়ু মিছিলও করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তারা প্রতি ওয়ার্ডে ৫১ জন করে ভোটার তৈরি করেছেন, যার মধ্যে স্বজনপ্রীতি ও অনেকে টাকা দিয়ে সদস্য হয়েছেন। প্রকৃত ত্যাগী ও পরিশ্রমী নেতা–কর্মীরা ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ইউনিয়নে প্রকৃত ত্যাগী বিএনপি কর্মীও তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন। কেবল মাত্র যারা টাকা দিয়েছেন এবং যাদের ভোটে আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব পুনরায় নির্বাচিত হতে পারবেন তাদেরকে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয় নেতাকর্মীদের অভিযোগ- বর্তমান কমিটির আহ্বায়ক মোহাম্মদ আবুল সিকদার ও সদস্য সচিব জাকির হোসেন রাঢ়ি পদ বাণিজ্য, টাকার বিনিময়ে ওয়ার্ড কমিটি গঠন এবং চিহ্নিত আওয়ামী পন্থীদের তালিকার অন্তর্ভুক্ত করার মতো গুরুতর কর্মকাণ্ডে জড়িত রয়েছেন। আগামীকাল শনিবার (২৩ আগস্ট) ইউনিয়ন বিএনপির সম্মেলন হওয়ার কথা থাকলেও গোপন সূত্রে জানা গেছে, বর্তমান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কে হবে তা উপজেলা কমিটি সিলেকশনের মাধ্যমে চূড়ান্ত করেছে।
এতে সম্মেলনে না হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এ নিয়ে ভোটার ও তৃণমূল নেতাকর্মী মধ্যে তীব্র অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, ভোট ছাড়া যদি নেতৃত্ব নির্বাচন হয় তবে প্রকৃত ত্যাগী নেতাকর্মী বঞ্চিত হবে। স্থানীয় নেতাকর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রতিটি ওয়ার্ড কমিটিতে টাকা বিনিময়ে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের লোক দলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এখন আবার নির্বাচন না করে সিলেকশনের নামে তারা নিজেদের মতো করে পদ ভাগাভাগি করবে বলে গুঞ্জন উঠেছে। অন্যদিকে সম্মেলনে ভোট প্রক্রিয়া ঠেকিয়ে দিয়ে আবারও টাকার বিনিময়ে পদ বিতরণ করবেন। তাদের দাবি- ইউনিয়ন বিএনপির নেতৃত্ব অবশ্যই ভোটের মাধ্যমে নির্ধারণ করতে হবে। ভোটাররাই নেতা নির্বাচন করবে—এটাই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া। তৃণমূল নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, আসন্ন সম্মেলনে যেন সুষ্ঠু ভোটা নিশ্চিত করা হয় এবং কেন্দ্রীয় নেতারা এই বিষয়ে দ্রুত হস্তক্ষেপ করবেন বলে আসাবাদ ব্যক্ত করেন তারা।
এবিষয়ে দুর্গাপাশা ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক মোহাম্মদ আবুল সিকদার বলেন, আপনি (প্রতিবেদক) দুর্গাপাশা আসেন, সরেজমিনে তদন্ত করলেই সব সত্য ঘটনা জানতে পারবেন। কমিটির ভিতরে কোন আওয়ামী পন্থীর আসে নাই, যদি হয়েও থাকে সকল ওয়ার্ড কমিটির আহবায়কদের সিদ্ধান্তেই এগুলো হয়েছে। দুর্গাপাশা ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিব জাকির হোসেন রাঢ়ি বলেন, আমার জানা মতেআওয়ামী পন্থী কোন লোক তালিকায় নেই।
যদি ভুলে ঢুকেও থাকে তাহলে অবশ্যই বাতিল করতে হবে। দুর্গাপাসা ইউনিয়ন বিএনপির সম্মেলনকে ঘিড়ে যদি একটি টাকা লেনদেন হয়ে থাকে, তার প্রমাণ দিতে পারলে আমি যেকোন শাস্তি মাথা পেতে নেব।