প্রান্ত মিস্ত্রি, নাজিরপুর (পিরোজপুর) প্রতিনিধি: পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নানা অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগে দিনব্যাপী অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত এ অভিযান পরিচালনা করে দুদকের একটি বিশেষ টিম।
অভিযানকালে হাসপাতালে দালালদের দৌরাত্ম্য, বাইরের ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দালালদের প্রভাব, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার রান্না ও নিম্নমানের খাবার পরিবেশন, কর্মরত চিকিৎসক ও কর্মচারীদের দেরিতে আসা, রোগীদের বাইরে পরীক্ষা করাতে বাধ্য করা, ওষুধ বিতরণে অনিয়মসহ নানা অসংগতি ধরা পড়ে।
এ ছাড়া টেস্ট মেশিনগুলো সচল আছে কি না এবং ভর্তি রোগীরা যথাযথ সেবা পাচ্ছেন কি না তা খতিয়ে দেখা হয়। অভিযানে সবচেয়ে ভয়াবহ তথ্য উঠে আসে ডাক্তার সংকট নিয়ে। পুরো স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মাত্র একজন চিকিৎসকের ওপর নির্ভর করছে শত শত রোগীর চিকিৎসা ব্যবস্থা।
অভিযান শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন দুদকের টিম লিডার ও পিরোজপুর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক পার্থ চন্দ্র পাল। তিনি বলেন,স্থানীয় সাংবাদিকদের প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই এ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি রোগীরা ন্যূনতম স্বাস্থ্যসেবা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন। খাবারের মান অত্যন্ত নিম্নমানের এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে রান্না হচ্ছে। সবচেয়ে উদ্বেগজনক হলো—পুরো হাসপাতাল কার্যত একজন চিকিৎসকের ওপর চলছে।
এ অভিযানে দুদকের উপসহকারী পরিচালক মো. মোয়াজ্জেম হোসেন সম্রাট এবং জিয়াউল হাসান অংশ নেন এবং দুদক সাত দিনের মধ্যে হাসপাতালের অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা নিরসনের নির্দেশ দিয়ে অভিযান শেষ করে। এ বিষয়ে নাজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মশিউর রহমান জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩১ জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও বর্তমানে মাত্র একজন কর্মরত আছেন।
মেডিক্যাল অফিসার, কনসালটেন্ট, গাইনি ও শিশু বিশেষজ্ঞসহ কোনো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বারবার জানানো হলেও সংকট নিরসন হয়নি। চিকিৎসক সংকট কাটানো না গেলে কাঙ্ক্ষিত স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া সম্ভব নয়।
