More

    পল্লী বিদ্যুৎ কর্মকর্তাদের দুর্নীতিতে পাথরঘাটায় তীব্র লোডশেডিং

    অবশ্যই পরুন

    বরগুনা প্রতিনিধি : আওয়ামী সরকারের পতনের পরেও দক্ষিণাঞ্চলের বিদ্যুৎ খাতে কোনো পরিবর্তন আসেনি। এখনও পল্লী বিদ্যুৎ কর্মকর্তাদের দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার কারণে পিরোজপুর, মঠবাড়িয়া ও বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলায় দীর্ঘ সময় লোডশেডিং চলছে। দিনে প্রায় ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ফলে অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে এসব এলাকার লাখো জেলে ও কৃষক।

    বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা একাধিকবার ঘোষণা দিয়েছেন—“ঢাকায় আগে লোডশেডিং হলে তবেই বাইরে হবে।” কিন্তু বাস্তবে দক্ষিণাঞ্চলেই দীর্ঘ লোডশেডিং চলছে। স্থানীয়রা বলছেন, জাতীয় গ্রিডে কোনো ঘাটতি না থাকলেও কর্মকর্তাদের দুর্নীতি ও বিদ্যুৎ চুরির কারণে এ ভোগান্তি সৃষ্টি হচ্ছে।

    জাতীয় গ্রিড কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিদ্যুৎ সরবরাহে কোনো সংকট নেই বরং চাহিদার চেয়ে বেশি বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। তাদের ভাষায়, “ঢাকা, খুলনা, বরিশাল—সব জায়গায় সমানভাবে বিদ্যুৎ দেওয়া হয়। দক্ষিণাঞ্চলে সামান্য লোডশেডিং হতে পারে, কিন্তু দিনে ৬–৭ ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকার প্রশ্নই ওঠে না।”

    তাহলে কোথায় সমস্যা? অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, স্থানীয় কিছু কর্মকর্তা বিদ্যুৎ চুরি করে বাণিজ্যিকভাবে অন্যত্র বিক্রি করছেন। অভিযোগ রয়েছে, পিরোজপুর পল্লী বিদ্যুৎ থেকে খুলনার কিছু কলকারখানায় ৩ টাকা বেশি দামে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। ফলে ঘাটতি পুষিয়ে নিতে পাথরঘাটা, মঠবাড়িয়া ও আশপাশের এলাকায় অতিরিক্ত লোডশেডিং চাপিয়ে দেওয়া হয়।

    দীর্ঘ লোডশেডিংয়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন জেলে ও কৃষকরা। পাথরঘাটার সমুদ্রগামী ট্রলারগুলোতে সময়মতো বরফ সরবরাহ করা যায় না, ফলে মাছ দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। এতে প্রতিবছর হাজার কোটি টাকার ক্ষতির মুখে পড়ছে উপকূলীয় জেলেরা। কৃষকরাও সেচযন্ত্র চালাতে না পেরে বিপাকে পড়েছেন। সরকারি রাজস্ব হারাচ্ছে দেশের অন্যতম সম্ভাবনাময় মৎস্য খাত।

    পাথরঘাটা সাব-জোনাল অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত ডিজিএম অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, “পিরোজপুর থেকে পাথরঘাটার দূরত্ব ৬৬ কিলোমিটার। ঝড়বৃষ্টিতে গাছপালা পড়ে গেলে লাইনে সমস্যা হয়। তখন মেরামতের জন্য কিছু সময় বিদ্যুৎ বন্ধ রাখতে হয়।” তবে প্রশ্ন উঠেছে—ঝড়বৃষ্টি না থাকলেও প্রতিদিন এত দীর্ঘ সময় লোডশেডিং কেন? এর কোনো সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেননি তিনি।

    জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ ঘাটতি নেই, অথচ দক্ষিণাঞ্চলের সাধারণ মানুষ প্রতিদিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ পাচ্ছে না। স্থানীয়দের অভিযোগ, দুর্নীতিগ্রস্ত কিছু কর্মকর্তা অবৈধ বাণিজ্যের মাধ্যমে নিজেদের আখের গোছাচ্ছেন, আর এর খেসারত দিচ্ছে কোটি কোটি ভোক্তা।

    এমন বাস্তবতায় প্রশ্ন উঠেছে—সরকার ও বিদ্যুৎ উপদেষ্টা যেখানেই শতভাগ বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন, সেখানে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ কেন এখনও অন্ধকারে?

    সম্পর্কিত সংবাদ

    সর্বশেষ সংবাদ

    মারা গেলেন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদি

    সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদি মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর)...