উজিরপুর (বরিশাল) প্রতিনিধি: উজিরপুর উপজেলা মৎস্য দপ্তরে সাংবাদিক পরিচয়ে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে রমজান আহম্মেদ রঞ্জু নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। তিনি নিজেকে আশ্রয় প্রতিদিন ও জবাবদিহি পত্রিকার বরিশাল ব্যুরো চিফ হিসেবে পরিচয় দেন।
তার সঙ্গে থাকা আরও ৩–৪ জন সহযোগীসহ তিনি মৎস্য কর্মকর্তাকে ক্যালকুলেটরে টাকার পরিমাণ দেখিয়ে সেই অঙ্কের চাঁদা দিতে চাপ দেন। দাবি কৃত চাঁদার টাকা না দিলে “দেখে নেওয়া” হবে—এমন হুমকিও দেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে উজিরপুর উপজেলা মৎস্য দপ্তরের কার্যালয়ে। সূত্র জানায়, রমজান আহম্মেদ রঞ্জু কথোপকথনের এক পর্যায়ে ক্যালকুলেটরে একটি বড় অঙ্ক দেখিয়ে তা পরিশোধের জন্য কর্মকর্তাকে বলেন।
মৎস্য কর্মকর্তা টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে নানা ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদর্শন করেন। এর আগে, সম্প্রতি পরিচালিত মৎস্য অভিযানের সময়ও রমজান আহম্মেদ রঞ্জু জব্দ করা ইলিশ মাছ নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার কাছে চাপ প্রয়োগ করেছিলেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে দায়িত্বপ্রাপ্ত মৎস্য কর্মকর্তা নিয়মবহির্ভূতভাবে কোনো মাছ দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন।
এ ঘটনায় দপ্তরের কর্মকর্তারা হতবাক হয়ে পড়েন এবং অফিসজুড়ে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। পরে বিষয়টি স্থানীয় সাংবাদিক মহলে জানাজানি হলে তারা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। উজিরপুর উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি মাহফুজুর রহমান মাসুম ও সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক মুন্না বলেন, “সাংবাদিকতার নাম ব্যবহার করে কেউ যদি অনৈতিকভাবে টাকা দাবি করে বা সরকারি অভিযানে প্রভাব বিস্তার করে, সেটা পুরো সাংবাদিক সমাজের জন্য লজ্জাজনক ও নিন্দনীয়।”
তিনি ঘটনার দ্রুত তদন্ত ও দোষীদের শাস্তির দাবি জানান। এ বিষয়ে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বলেন প্রসেন মজুমদার বনেন, “বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা ইতোমধ্যে উচ্চতর কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি এবং লিখিতভাবে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।” উজিরপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আঃ রহিম সর্দার বলেন, এ ধরনের চাঁদাবাজি উজিরপুর হতে দেওয়া যাবে না।
এদিকে, স্থানীয় প্রশাসনও ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ে তদন্তে নেমেছে বলে জানা গেছে। উপজেলার সচেতন নাগরিকরা জানিয়েছেন, সাংবাদিকতার মতো পবিত্র পেশাকে ব্যক্তিস্বার্থে ব্যবহার করে কেউ যেন এমন অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়াতে না পারে—তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ প্রয়োজন।
