বরিশালের অপসো স্যালাইন ফার্মাসিউটিক্যালসে শ্রমিক ছাঁটাইকে ঘিরে টানা চার দিনের অচলাবস্থা চলছে। বুধবার (৫ নভেম্বর) বিকেলে আঞ্চলিক শ্রম দপ্তরে বৈঠকে বসে মালিক ও শ্রমিক উভয়পক্ষ। কিন্তু বৈঠকেও বিষয়টি সমাধান হয়নি। ঢাকা থেকে আসা মালিকপক্ষের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, ‘ছাঁটাই হওয়া শ্রমিকদের আর ফেরত নেওয়া সম্ভব নয়।
’ অন্যদিকে শ্রমিকরা দাবি তুলেছেন, ‘চাকরি ফেরত না পেলে আন্দোলন আরো বিস্তৃত হবে।’ আন্দোলনরত শ্রমিকদের সঙ্গে শুরু থেকেই মাঠে থাকা বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল বাসদের সদস্যসচিব ডা. মনীষা চক্রবর্তী বলেন, ‘এই কারখানার ৪০ বছরের ইতিহাসে এত বড় ছাঁটাই হয়নি। শ্রমিকরা মাসখানেক আগে ট্রেড ইউনিয়নের অনুমোদন পান, আর তার পরপরই এই ছাঁটাই।’
শ্রমিকদের অভিযোগ, হঠাৎ করেই ৫৭০ জন শ্রমিককে কাজ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তাদের অনেকেই ১০ থেকে ২৫ বছর ধরে এই কারখানায় কাজ করছিলেন। ছাঁটাই হওয়া শ্রমিক আলমগীর হোসেন বলেন, ‘বেতন পাই না, ঘরে বাজার নাই। মা অসুস্থ, আমি এখন কোথায় যাব?’ অপসোনিন লিমিটেডের এইচআর ও সিএন্ডবি বিভাগের কর্মকর্তা মো. আল মাসুদ বলেন, ‘উৎপাদনের ক্ষেত্রে আমরা দীর্ঘদিন লোকসান গুনছি। তাই উৎপাদন পুনর্বিন্যাস করতে হয়েছে।
ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত একেবারে ব্যবসায়িক কারণে নেওয়া হয়েছে। ছাঁটাই হওয়া শ্রমিকদের পাওনা ও ক্ষতিপূরণ নিয়ম অনুযায়ী দেওয়া হবে।’ শ্রমিকদের পক্ষে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সভাপতি একে আজাদ এবং মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আফরোজা খানম নাসরিন।
তারা বলেন, ‘ছাঁটাই করা শ্রমিকদের কাজে ফেরাতে হবে। না হলে এই আন্দোলন শুধু অপসো স্যালাইনেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরিশালের সব শিল্প এলাকায় ছড়িয়ে পড়বে। বৈঠক শেষে শ্রম অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বলেন, ‘দুইপক্ষের বক্তব্য শুনে আলোচনা অব্যাহত থাকবে। সমঝোতার চেষ্টা চলছে।’
