ঝালকাঠির কাঠালিয়া উপজেলায় গত মঙ্গলবার তথা ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উদযাপনকালে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ফেরার পথে একটি অপ্রত্যাশিত ও বিব্রতকর ঘটনার মুখোমুখি হন বহিষ্কৃত উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আখতার হোসেন নিজাম মীরবহর। সম্ভ্রমজনক এই দিনে দলীয় অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও তর্কবিতর্কের এক পর্যায়ে নিজ দলের নেতাকর্মীদের হাতেই তিনি লাঞ্ছিত হন।
সকালে উপজেলার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ঘটে যাওয়া এই ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শী এবং দলীয় সূত্রে জানা যায়, ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস উপলক্ষে কাঠালিয়া উপজেলা পরিষদের সামনে অবস্থিত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে দলের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে নেতাকর্মীরা ফিরে আসছিলেন।
কিন্তু বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পৌঁছানোর পর দলীয় অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও দাওয়াত সংক্রান্ত বিষয়ের কারণে উত্তেজনা দেখা দেয় এবং দলীয় কর্মীরাই নিজাম মীরবহরের উপর চড়াও হয়ে তাকে লাঞ্ছিত করে। এই ঘটনার সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. জালালুর রহমান আকন, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি মো. হাসিব ভুট্রো, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শাহীন হাওলাদার এবং সদর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. নুরুজ্জামান বাদলসহ বিভিন্ন স্তরের বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী।
ঘটনার বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আলিমুল ইসলাম মুন্সি জানান যে, বিজয় দিবসে শহীদ মিনারে ফুল দেওয়ার জন্য দলের মাত্র নয়জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন। অন্যান্য সহায়ক সংগঠন যেমন ছাত্রদলকে দাওয়াত না দেওয়ার কারণে দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে মনোমালিন্য ও ক্ষোভের জন্ম হয়। এর প্রত্যক্ষ ফলশ্রুতি হিসেবে বাসস্ট্যান্ডে নিজাম মীরবহরের সাথে তর্কবিতর্ক হয় এবং একপর্যায়ে তিনি লাঞ্ছিত হন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসার পর মীরবহরকে উদ্ধার করে তার বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। লাঞ্ছিত হওয়ার পর আখতার হোসেন নিজাম মীরবহর জানান, ‘মহান বিজয় দিবসের এই সময়ে, যখন সকলের মধ্যে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার অনুভূতি তৈরি হওয়া উচিত, তখনই আমাকে আমার দলের লোকেরা লাঞ্ছিত করেছে। এমন কাজ আমাদের দলের চাইতে বাহিরের যারা দলের মঙ্গল চায় না তারাই করতে পারে।
‘ দলের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির ঘটনাকে সামান্য হাতাহাতি হিসেবে উল্লেখ করেছেন উপজেলাবাসার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. জালালুর রহমান আকন, যিনি পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন এবং আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে এই সমস্যা দলীয় স্তরে মীমাংসা হবে। এদিকে, কাঠালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাছের রায়হান জানান যে, ঘটনাটি সম্পর্কে তারা অবহিত আছেন, তবে এখনো পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
