More

    তজুমদ্দিনে পাউবোর বিলাসি প্রকল্প, পাঁচশতাধিক পরিবার উদ্বাস্তু হওয়ার শঙ্কা

    অবশ্যই পরুন

    ভোলার তজুমদ্দিনে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধের নামে বিলাসিতা প্রকল্প গ্রহণের ফলে বেড়িবাঁধ এলাকায় উচ্ছেদ হওয়া পাঁচশতাধিক পরিবার উদ্বাস্তু শিবিরে যুক্ত হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। বেড়িবাঁধের ফলে উচ্ছেদ হওয়ার পরিবারগুলোকে ক্ষতিপূরণ না দিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান জোরপূর্বক কাজ বাস্তবায়ণের চেষ্টা করলে ১২ ডিসেম্বর এলাকাবাসী কাজ বন্ধ করে দেয় এবং ১৯ ডিসেম্বর মানববন্ধন করে। সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালে যে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে তা টেকসই বেড়িবাঁধ।

    কিন্তু সেটিকে পাশ কাটিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড স্বৈরাচার সরকারের পরিকল্পনা মোতাবেক একটি বিলাসিতা প্রকল্প গ্রহণ করে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে। ৭৪ কোটি ১৭ লক্ষ ৩৬ হাজার ৪৫৭.৩১ টাকা ব্যায়ে উপকূলীয় বাঁধ পুনর্বাসন, নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন ও জীবনযাত্রার মানউন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় দুই কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ পায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স গোলাম রব্বানী কনস্ট্রাকশন। কাজটি ২০২৬ সালের জুন মাসে শেষ করার কথা থকেলেও এখন পর্যন্ত প্রকল্পে কাজ হয়েছে মাত্র ২০ থেকে ৩০ ভাগ।

    চুক্তি অনুযায়ী পানি উন্নয়ন বোর্ড ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান যথা সময়ে কাজ না করে ২০২৫ সালের নভেম্বর মাসে এসে তড়িঘড়ি করে বেড়িবাঁধের কাজ শুরু করেন। মাটি কাটার কাজ শুরু করার ফলে বেড়িবাঁধ এলাকার প্রায় পাঁচশতাধিক পরিবার তাদের বসতঘর হারিয়ে উদ্বাস্তু শিবিরে যুক্ত হওয়ার আশংকা থেকে ১২ ডিসেম্বর কাজ বন্ধ করে দেয় এলাকাবাসী। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বিলাসিতার বেড়িবাঁধ নির্মাণের ফলে বসতঘরের পাশাপাশি ফসলি জমি ও সুপারি বাগানসহ বিভিন্ন ধরনের গাছ পালা কেটে নষ্ট করলেও ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলিকে ক্ষতি পূরণ না দিয়ে ক্ষমতার জোরে বেড়িবাঁধের কাজ বাস্তবায়ন করার চেষ্টা চালায়।

    ক্ষতিগ্রস্তরা বেড়িবাঁধটি বর্তমান অবন্থান থেকে ৫ /১০ মিটার পূর্বদিকে অথবা তাদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ দাবিতে ১৯ ডিসেম্বর শুক্রবার দুপুরে হাজিকান্দি, দালালকান্দি, মাওলানাকান্দি ও ভূইয়াকান্দির কয়েকশ বেড়িবাঁধের ওপর মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন।

    ক্ষতিগ্রস্ত মো. শাহিন, সাত্তার, সোহেল, ফরিদ, মো. হাসান, নবী মাঝি, জাহাঙ্গীর পিটারসহ অনেকে জানান, ২০১৮ সালে যে বেড়িবাঁধ করা হয়েছে সেটিই আমাদের জন্য টেকসই বেড়িবাঁধ। পরে ২০২৩ সালে পতিত সরকারের যোগসাজশে পানি উন্নয়ন বোর্ড বেড়িবাঁধের নামে বর্তমানে যেটি করছে সেটি বিলাসিতার প্রকল্প। এই বিলাসিতার প্রকল্পের দ্বারা আমাদের প্রায় পাঁচশতাধিক পরিবারকে উচ্ছেদ করে উদ্বাস্তু শিবিরে যুক্ত করতে চাচ্ছেন। বেড়িবাঁধটি বর্তমান অবস্থান থেকে ৫ থেকে ১০মিটার পূর্বদিকে সরিয়ে দিলে আমরা পরিবার-পরিজন নিয়ে উদ্বাস্তু শিবিরে যুক্ত হওয়া থেকে রক্ষা পাবো।

    বেড়িবাঁধের কাজ তদারকিতে থাকা পাউবোর উপ-সহকারি প্রকৌশলী তারভীর হোসেন রাসেল সাংবাদিকদের বলেন, এই প্রকল্পে জমি অধিগ্রহণের জন্য বরাদ্দ না থাকায় ক্ষতিগ্রস্থদের কোন টাকা-পয়সা দেয়ার সুযোগ নেই। যে কারণে হাজিকান্দি, দালালকান্দি ও মাওলানাকান্দি বেড়িবাঁধের কাজ বন্ধ করে দেয় এলাকাবাসী। কাজ বন্ধের বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

    সম্পর্কিত সংবাদ

    সর্বশেষ সংবাদ

    বরিশালে জিয়াউল আহসানের পৈতৃক বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর

    মানবতাবিরোধী ও খুন-গুম হত্যা মামলায় কারাবন্দী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (বরখাস্ত) জিয়াউল আহসানের বরিশাল নগরীর পৈতৃক বাড়িতে হামলা হয়েছে। শুক্রবার রাত...