বেতাগী (বরগুনা) প্রতিনিধি : বরগুনার বেতাগীতে পূর্বশত্রুতার জেরে একই পরিবারের নারী-পুরুষ চারজনকে নির্মমভাবে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার বেতাগী পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে। হামলায় আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের পর থেকে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য বাদী পরিবারকে প্রতিপক্ষ হয়রানি মূলক মামলা দায়েরের হুমকি দিচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
অভিযোগ অনুযায়ী, নির্দিষ্ট দিনে (১৫ ডিসেম্বর) দুপুর আনুমানিক দুইটার দিকে স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি পূর্ববিরোধের জেরে ভুক্তভোগী পরিবারের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ ঘটনায় বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী মিলন কর্মকার দাবি করেন, অভিযুক্তরা দীর্ঘদিন ধরে নানা ধরনের হুমকি দিয়ে আসছিল এবং সর্বশেষ হামলার মাধ্যমে প্রাণনাশের চেষ্টা করে। ঘটনার পর বেতাগী থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে ( নং-৬)। মামলা দায়েরের পর থেকে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য বাদী পরিবারকে প্রতিপক্ষ হয়রানি মূলক মামলা দায়েরের হুমকি দিচ্ছে।
তাছাড়াও ঐ ঘটনার পরপরই শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) রাতে বেতাগী পৌর শহরে তাদের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান সীতা রাম জুয়েলার্স চুরি সংঘটিত হয়। এ সময় দুই লক্ষ টাকার স্বর্ণ ও ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকার রৌপ্য নিয়ে যায়। ঐ হামলায় আহতরা হলেন, গৃহবধূ দোলা রানী কর্মকার (৪৫), শিক্ষার্থী তিথি কর্মকার (১৯), শিক্ষার্থী দুরন্ত কর্মকার (২৪) ও মিলন কর্মকার (৫৮)।
অভিযোগে বলা হয়, অভিযুক্তরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বাড়িতে প্রবেশ করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে। একপর্যায়ে নারী-পুরুষ চারজনকে বেধড়ক মারধর করে। এ সময় এক কিশোরীকে হত্যার উদ্দেশ্যে আঘাত করা হয় এবং শ্লীলতাহানির অভিযোগও রয়েছে। স্থানীয়দের সহায়তায় আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। মামলায় অভিযুক্ত হিসেবে অসীম দেবনাথ, চন্দ্রকান্ত দেবনাথ, শংকরমালা, সুমিত্রা দেবনাথ, উজ্জ্বল দেবনাথ ও জয়দেব মালাকারসহ একাধিক ব্যক্তির নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
তবে এ ঘটনায় অসীম দেবনাথ আদালতে হাজিরা দিতে গেলে আদালত তাকে জেলে প্রেরণ করে। অভিযুক্ত অন্যরা এর পর থেকে আত্মগোপনে থেকে বাদী পরিবারকে হুমকি দিয়ে আসছে বলে অভিযোগ রয়েছে। অবশ্য মামলার আসামী উজ্জ্বল দেবনাথ এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এসব মিথ্যা ও বানোয়াট। বেতাগী থানার অফিসার্স ইনচার্জ মোহাম্মদ জুয়েল ইসলাম বলেন,‘এ ঘটনায় থানায় মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে।
অভিযুক্ত একজন আদালতে হাজিরা দেওয়ার সময় আদালত তাকে হাজতে প্রেরণ করে। অন্যদের গ্রেপ্তারে তৎপরতা চলছে এবং তদন্ত শেষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ ভুক্তভোগী মিলন কর্মকার ও তার পরিবারের দাবি, দ্রুত ও সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের আইনের আওতায় আনা হোক, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের সহিংস ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে।
