More

    পাথরঘাটায় জামায়াত–বিএনপির পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, থমথমে পরিস্থিতি

    অবশ্যই পরুন

    আরিফ তৌহীদ,পাথরঘাটা (বরগুনা) প্রতিনিধি: বরগুনার পাথরঘাটায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) অঙ্গসংগঠনের মধ্যে পাল্টাপাল্টি অভিযোগকে কেন্দ্র করে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। ঘটনার পর থেকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী পাথরঘাটা উপজেলা শাখার উদ্যোগে আয়োজিত একটি কর্মী সমাবেশে সন্ত্রাসী হামলার অভিযোগ উঠেছে।

    বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে পাথরঘাটা উপজেলা জামায়াতে ইসলামী কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির উপজেলা সেক্রেটারি জাহাঙ্গীর হোসেন এ অভিযোগ করেন। তিনি জানান, গত বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) রাত আনুমানিক ৮টার দিকে কাঁঠালতলী ইউনিয়নের একটি বাড়িতে পূর্বঘোষিত কর্মী সমাবেশ চলাকালে হঠাৎ একদল সন্ত্রাসী হামলা চালায়। এতে অন্তত ১৫ জন জামায়াত কর্মী আহত হন। হামলার ফলে সমাবেশ পণ্ড হয়ে যায় এবং এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সংবাদ সম্মেলনে জামায়াত নেতারা অভিযোগ করেন, এটি একটি পরিকল্পিত হামলা।

    হামলায় নেতৃত্ব দিয়েছেন সোলায়মান সাদিক নামে এক ব্যক্তি। হামলায় গুরুতর আহতদের মধ্যে রয়েছেন— পৌর যুব বিভাগের সেক্রেটারি আব্দুল কাইয়ুম মীর, পৌর সহকারী সেক্রেটারি মোহাম্মদ তাওহীদসহ ওয়ালিদ, ইলিয়াস ও ফুলমিয়া। তারা অবিলম্বে হামলাকারীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলে কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেন। জামায়াত নেতারা আরও দাবি করেন, অভিযুক্ত সোলায়মান সাদিক নিজেকে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব নুরুল ইসলাম মণির ভাতিজা পরিচয়ে পরিচিত করিয়ে আসছেন এবং অতীতে তিনি শ্রমিক লীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন বলেও অভিযোগ তোলা হয়।

    এ বিষয়ে অভিযুক্ত সোলায়মান সাদিকের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমি গত সাত দিন ধরে ঢাকায় অবস্থান করছি। ঘটনার সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। কেন আমাকে জড়িয়ে এমন অভিযোগ করা হয়েছে, তা আমার জানা নেই।” পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মংচেনলা বলেন, “ঘটনার কথা শোনার সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। প্রাথমিকভাবে বোঝা যাচ্ছে কিছু একটা ঘটনা ঘটেছে, তবে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

    অন্যদিকে, একই দিন বিকাল ৫টায় বিএনপির উপজেলা দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল পাথরঘাটা উপজেলা শাখার নেতারা জামায়াতের অভিযোগকে ‘মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে দাবি করেন। সংবাদ সম্মেলনে স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব এনামুল হক ইমু বলেন, “জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে একটি স্বাধীনতাবিরোধী চক্র বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাদের জড়িয়ে বিভ্রান্তিকর ও মানহানিকর তথ্য প্রচার করছে।

    কথিত ঘটনার সময় অভিযুক্ত সোলায়মান সাদিক ঢাকায় অবস্থান করছিলেন এবং যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তারা কেউ ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না।” তিনি অভিযোগ করেন, কোনো নির্ভরযোগ্য প্রমাণ ছাড়াই বিএনপি ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাদের জড়িয়ে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে, যা রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অংশ। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেন তারা। এদিকে, পাল্টাপাল্টি অভিযোগের জেরে পাথরঘাটা এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

    সম্পর্কিত সংবাদ

    সর্বশেষ সংবাদ

    বরিশালে ধর্ষণ প্রতিরোধ মঞ্চের সদস্য সচিবের বিরুদ্ধেই ধর্ষণ মামলা

    বরিশাল নগরীতে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক নেত্রীকে একাধিকবার ধর্ষণ, গোপনে ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমেইল এবং পরবর্তীতে...