নিজস্ব প্রতিবেদক: বরিশাল জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসের নাজির (কাম পেসকার) তৌহিদুর রশিদ ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন—এমন অভিযোগ উঠেছে। অনিয়ম, ঘুষবাণিজ্য, সরকারি অর্থ আত্মসাৎসহ একাধিক অভিযোগে তিনি আলোচনায়। অভিযোগ রয়েছে, বরিশাল ও ভোলা—দুই অফিসের গুরুত্বপূর্ণ চারটি দায়িত্ব একাই সামলাচ্ছেন তিনি, অথচ সরকারি নিয়মের তোয়াক্কা নেই।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ভোলা সদর সেটেলমেন্ট অফিসে দীর্ঘদিন কর্মরত অবস্থায় তৌহিদুর রশিদ ভূমি মালিকদের কাছ থেকে অনিয়ম ও ঘুষের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেন। এমনকি জরুরি অবস্থার সময় ঘুষবাণিজ্যের অভিযোগে তিনি যৌথবাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন, যা সে সময় টেলিভিশন সংবাদেও প্রচারিত হয়।
পরবর্তীতে ডেপুটেশনে বরিশাল জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসে যোগদানের পর শুরু হয় নতুন করে দুর্নীতির আরেক অধ্যায়। অভিযোগ রয়েছে, অফিসের অধীনস্থ উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিসগুলোর নাইটগার্ড ও ঝাড়ুদারদের মাসিক বেতনের সময় প্রতি জনের কাছ থেকে ২-৩ হাজার টাকা ঘুষ নেন তিনি। কেউ ঘুষ না দিলে তাদের বেতন বিলই করেন না বলে অভিযোগ উঠেছে।
এছাড়া, বেতন বকেয়া থাকলে ৫ হাজার টাকা ঘুষের বিনিময়ে বিল অনুমোদন করেন বলেও জানা গেছে। শুধু তাই নয়, অফিস সরঞ্জাম কেনার নামে ভুয়া বিল-ভাউচারের মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন তৌহিদুর রশিদ।
বর্তমানে বরিশালে দায়িত্বে থাকলেও তিনি ভোলা সদর সেটেলমেন্ট অফিসের নাজির-পেসকার পদও ধরে রেখেছেন, যার ফলে স্থানীয় সেবা প্রার্থীরা ভোগান্তিতে পড়েছেন। বরিশাল অফিসে বসেই ১০০ টাকার পর্চার জন্য আদায় করছেন ১,০০০ থেকে ১,৫০০ টাকা পর্যন্ত—এমন অভিযোগও রয়েছে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, তার নামে-বেনামে রয়েছে বিপুল সম্পদ—নোয়াখালী ও চট্টগ্রামে ভবন, ঢাকায় ফ্ল্যাট, লক্ষ্মীপুরে দোকান ও স্টলসহ অর্ধকোটি টাকার সম্পত্তি। সঠিক তদন্ত হলে বেরিয়ে আসবে তার দুর্নীতির চিত্র।
ভুক্তভোগীদের মধ্যে নলছিটি, ভান্ডারিয়া, নেছারাবাদ, পিরোজপুর, কাউখালী ও মঠবাড়িয়া উপজেলার কয়েকজন কর্মচারী ক্ষোভ প্রকাশ করে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
অভিযোগ প্রসঙ্গে তৌহিদুর রশিদ বলেন,আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। আমি কারও কাছ থেকে টাকা নিইনি, আমার কোনো বাড়িও নেই।”
এ বিষয়ে বরিশাল জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসার মোঃ মোজাহিদুল ইসলাম জানান,বিষয়টি আমার জানা নেই। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে দেখা হবে।”