দুমকী (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি: একসঙ্গে দুই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করার অভিযোগে পটুয়াখালীর দুমকী উপজেলার আজিজ আহম্মেদ ডিগ্রি কলেজের তিন শিক্ষককে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি), ঢাকা। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হওয়ার পর এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
অভিযুক্ত শিক্ষকরা হলেন—
- জীববিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক মো. সিদ্দিকুর রহমান (ইনডেক্স: ৩০৭৯৭১২),
- বাংলা বিভাগের প্রভাষক শাহিনা আক্তার (ইনডেক্স: ৩০৭৯৭১৬) এবং
- ইসলাম শিক্ষা বিভাগের প্রভাষক মো. মোশারেফ হোসেন (ইনডেক্স: ৩০৮৬৮৪৪)।
জানা যায়, চলতি বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি অনলাইন পোর্টাল দৈনিক শিক্ষা ডটকমে তিন শিক্ষকের দ্বৈত চাকরির বিষয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়। পরে ১৯ মার্চ মাউশির সহকারী পরিচালক মো. মাঈন উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় মাউশির বরিশাল আঞ্চলিক পরিচালক প্রফেসর মো. ওমর ফারুক-এর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের কমিটিকে।
তদন্ত কমিটি সরেজমিনে যাচাই-বাছাই শেষে তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের সত্যতা পান। এরপর ৭ অক্টোবর মাউশির সহকারী পরিচালক অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় কেন তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে না— সে বিষয়ে ৭ কার্যদিবসের মধ্যে জবাব দিতে নির্দেশ দেন।
তদন্তে যা জানা গেছে:
- মো. সিদ্দিকুর রহমান ২০০৪ সালে উত্তর মুরাদিয়া বশিরিয়া আলিম মাদ্রাসায় নিয়োগ নিয়ে এমপিওভুক্ত হন এবং ২০১০ সাল পর্যন্ত ওই প্রতিষ্ঠান থেকে বেতন-ভাতা নেন। একই সময়ে তিনি আজিজ আহম্মেদ কলেজেও শিক্ষকতা করছিলেন।
- শাহিনা আক্তার কারখানা আলিম মাদ্রাসায় চাকরি করে ২০১০ সালের জুন পর্যন্ত বেতন-ভাতা তোলেন। অথচ ২০০৫ সাল থেকেই তিনি আজিজ আহম্মেদ কলেজে প্রভাষক হিসেবে কর্মরত।
- মো. মোশারেফ হোসেন সালামপুর আমিনিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা থেকে ২০১০ সালের পরও বেতন-ভাতা নেন, একইসাথে ২০০৪ সাল থেকে আজিজ আহম্মেদ কলেজেও চাকরি করেন।
তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, সিনিয়র স্কেল প্রাপ্তি নিয়ে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের জের ধরেই তাঁদের দ্বৈত চাকরির বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।
অভিযুক্ত প্রভাষক মো. সিদ্দিকুর রহমান এ বিষয়ে বলেন,“দুই প্রতিষ্ঠানে চাকরি নেওয়া অপরাধ কিনা, সেটা আইনই বলতে পারবে।”
প্রভাষক শাহিনা আক্তার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি।
আর মো. মোশারেফ হোসেন বলেন,“১৯৯৫ সালের বিধান অনুযায়ী আমি নিয়োগ নিয়েছি। ইতিমধ্যে কারণ দর্শানোর চিঠির জবাব দিয়েছি।”
আজিজ আহম্মেদ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো. আহসানুল হক বলেন, “মাউশির চিঠি কলেজে এসেছে। সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে।”