বরিশালের উজিরপুর উপজেলার বামরাইল ইউনিয়নে দিন দিন বেড়েই চলেছে সংঘবদ্ধ ডাকাতির ঘটনা। স্থানীয়দের অভিযোগ- লোকমান ফকিরের নেতৃত্বে একটি সংঘবদ্ধ চক্র দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় চাঁদাবাজি, ডাকাতি ও নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে। এ অবস্থায় গ্রামবাসী আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। একের পর এক বাড়িঘর ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে টাকা-পয়সা ও মালামাল লুট করছে এই চক্র।
গত ১৯ জুলাই দিবাগত রাত সাড়ে ২টার দিকে ডাকাত দলের তাণ্ডবে আতঙ্কিত হয়ে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করেন স্থানীয় রোজিনা বেগম। কিন্তু পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই লোকমান ফকির ও তার সহযোগীরা পালিয়ে যায়। পরে পুলিশকে রোজিনা বেগম ওই চক্রের কয়েকজনের নাম উল্লেখ করেন। পরদিন সকালে ৯৯৯-এর পরামর্শে রোজিনা বেগম উজিরপুর মডেল থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা মামলা নেননি বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এমনকি লিখিত অভিযোগও গ্রহণ করা হয়নি। পরবর্তীতে তিনি ২০ জুলাই আদালতে মামলা দায়ের করলে আদালত ফৌজদারি কার্যবিধির ২০২ ধারায় আসামিদের গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করার নির্দেশ দেন। তবে অভিযোগ উঠেছে, স্পষ্ট নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও উজিরপুর থানা পুলিশ এখনো কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এদিকে আসামিরা প্রকাশ্যে এলাকায় ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ তাদের ধরছে না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগীসহ সাধারণ মানুষ।
ব্যবসায়ী সুলতান সরদার বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা থাকলেও পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করছে না। বরং নীরব ভূমিকা পালন করছে।” প্রতিবেশী আবু বক্কর হাওলাদার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমরা নিরাপদ নই। আদালতে মামলা করলেও পুলিশ নীরব থাকে। উল্টো আমাদের হয়রানি করা হয়।” একই সুরে খোকন হাওলাদার বলেন, এই দলটি একটি সংঘবদ্ধ চক্র।
আইনের আওতায় না আনলে আমরা ভয়-ভীতির মধ্যেই থাকতে বাধ্য হব। মামলা করলেও আবার পুলিশি হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে।” গ্রামবাসীর অভিযোগ- আসামিরা পুলিশের ‘নাকের ডগায়’ ঘুরলেও কোনো ধরপাকড় হচ্ছে না।
ফলে প্রশ্ন উঠেছে—তাহলে কি পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা ডাকাত দলের স্বার্থেই? সাধারণ মানুষের দাবি, সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের দৌরাত্ম্য বন্ধে দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হোক। এ বিষয়ে উজিরপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আব্দুস সালাম বলেন- আসামীরা খুব ধুর্ত স্বভাবের লোক, পালিয়ে বেড়াচ্ছে। খুব শীঘ্রই তাদের আটক করা হবে।’